Saturday, March 14, 2020

ক্যালিপ্সো : পাপিয়াজির নন্নি মাখ্যন তোলে করোন্না জেন্নারেল


খাচ্ছিতো, খাব্বো পাপিয়াজির নন্নি মাখ্যন।
সাহিত্য আরেব্বাবা পড়বো কখ্যন?
মাখ্যন যা নন্নিও তা।
ভেজালখোরে বুঝবে না।

রইজউদ্দিনের স্বপন সোয়াদ।
শামসু, আনিস সেধেছে বাদ।
কে উঠেছে  কোন চংগ বেয়ে!
চেনাচিনিতেই যদি মেলাও  হিশাব,
প্রিয়তমদের দাও স্বাধিনতা খেতাব।
তোমাকে অভিবাদন প্রিয়তমা
কাদরীর কবিতাটাকে প্রিয় বললে,
আবার পিয়ারির অভিবাদন প্রাপ্তিতে বাদ সাধলে।
ছড়াকারদের কবি বলো,
সাহেব বিবির সংবাদ খ্যালো,
সান্ত্রি মন্ত্রি ছবি চলো।
সে ছবিতেও গুড়ে বালি।
সাগর রুনি কৈ হারালি।
কখ্যন পড়বো  আরেব্বাবা সাহিত্য!
মাখ্যন নন্নি পাপিয়াজির খাব্বো, খাচ্ছিতো।

কেন্দ্রিয় ব্যাঙ্কের সাবেক গভর্নর কহে।
পেটে দিলে তবে পিঠে সহে।
এ কেমন কথা ভাইজান!
দাসত্ব প্রথার সনাতন জয়গান।
তোমার সন্তান সব পাবে,
আর আমারটা শুধু লিল্লাহ খাবে!
সুন্দরকে আমি বাংলায় চাই,
বাংলায় আমি সুন্দর পাই।
এক ভাষাতে আমরা সবাই চলি,
অনাচারের রায়ে বড়কপালি, ছোটকপালি।
এই প্রহসন বিচার আমরা মানবো কেনো?
মগ্নতায় পরায় শেকল দুর্নিতিবাজ আমলা দানো।
নামে জাতিয় কবিতা পরিষদ,
সেখানে দেখি কবিতার রদ।
নামে বাংলা একাডেমি,
সেখানে দেখি ভাষাজম্বিদের মমি।
নামে লিটেল ম্যাগ অথচ বুড়ো ভামদের ঘ্যাগ।
যা দেখানো হয় তাতে মহাছদ্ম মেকাপ।
চোখে ঠুলি মারে করোন্নার  চেকাপ।
কখ্যন পড়বো  আরেব্বাবা সাহিত্য!
মাখ্যন নন্নি পাপিয়াজির খাব্বো, খাচ্ছিতো।

পুর্ব পাকিস্তানে আমার জন্মের সালে,
জেনারেল করোন্না আয়ুব শাহির ১৯৬৫ কালে,
ভারতের সাথে জংগ বাধায়ে
সামরিক জান্তা দিলো পাকিপ্রেম জাগায়ে!
তারপর উত্তর ভারতিয় আখতার হামিদ খান
কুমিল্লার বার্ডে সাত তারকা হোটেল স্টাইলে
দেশি আমলাদের শেখালো,
মার্কিন সাহাজ্যের ডলার মেরে খেয়ে,
স্থানিয় কৃষকের চোখে ধুলা দিয়ে,
ধানমন্ডি, গুলশান, বনানিতে
প্রাইভেট টেনিস লনে রঙ্গেঢঙ্গে
কিতনা মাজাকে জিন এন্ড টনিক পিয়োগে বঙ্গে!
কখ্যন পড়বো  আরেব্বাবা সাহিত্য!
মাখ্যন নন্নি পাপিয়াজির খাব্বো, খাচ্ছিতো।

দেখুন, করোন্না এসেছে চিনে  গাছ পেকে।
মাও  ছিলো আয়ুবের মিত্র
এবং বাংলাদেশের স্বাধিনতার বিরোধি।
মাওয়ের লাল বই তরিকায়
আয়ুবের সবুজ বইয়ে লেখা,
আমরা প্রভু নই, বন্ধু!
কেনো এটা তার লিখতে হলো?
করোন্না ইয়াহিয়া এলো,
১৯৭১ এর জেনোসাইড ঘটালো।
মুক্তিবাহিনিকে সহায়তা করে
ভারতের ইন্দিরা বাংলাদেশিদের বাচালো।
বন্দিখানা থেকে ফেরত এলো বংগবন্ধু শেখ মুজিবুর।
এবং কয়েক বছরের ভেতর
করোন্না মেজরদের হাতে স্বপরিবারে নিহত হলো।
অভ্যুথ্যান পালটা অভ্যুথ্যানে,
একের পর এক কর্নেল জেনারেল বোঝালো,
আমরা করোন্নার বংশধর নই,
আমরা দরকারি এবং বিপ্লবি ব্যাকটেরিয়া।
ক্ষমতায় বসলো জেনারেল জিয়া।
কখ্যন পড়বো  আরেব্বাবা সাহিত্য!
মাখ্যন নন্নি পাপিয়াজির খাব্বো, খাচ্ছিতো।

ক্ষমতায় বসে, নিয়ে এলো করোন্না কলাবরেটর জামাত।
চিটাগাঙ্গে জেনারেল মঞ্জুরের বোমাতে কুপোকাত।
সে হত্যাকান্ডের সুজোগে করোন্না পন্থিরা
কোর্ট মার্শালে পাইকারি লটকালো মুক্তিযোদ্ধা সেনানিদের।
এলো করোন্না জেনারেল এরশাদ।
জারি করলো করোন্না দিয়ে করোন্না তুলবার বিশম্বাদ।
লড়লাম তার সৈনিক ও বেতনভুকদের সাথে,
হাটেঘাটে মহল্লায় শামসুর রাহমানের কবিতায় সওয়ার
নীলা, লিটু, পলাশ, প্রিসিলা, আব্দুল্লাহদের বরাতে।
আশির দশক গলা ফাটিয়ে লোকজনকে জানালো,
জেনারেলরাইতো করোন্না,
স্বাধিন দেশটাকে এরাইতো বানায় জেলখানা।
কখ্যন পড়বো  আরেব্বাবা সাহিত্য!
মাখ্যন নন্নি পাপ্পিয়াজির খাব্বো, খাচ্ছিতো।

লোকজন শুনলো,
করোন্না জেনারেলদের হটালো।
গনতন্ত্রের শপথে যারা আসলো,
পর্দার অন্তরালে করলো জেনারেলদের সাথে দফা,
এক্সট্রা জুডিশিয়ারি ক্রসফায়ারে বাঙ্গালির রফা!
ধর্মিয় সন্ত্রাশ ও মাদক নিরাময় কেন্দ্রে দেশ ভরে গেলো।
চৈনিক, পাকিস্তান এবং করোন্না জেনারেলরা
নিতে থাকলো তাদের আখেরি প্রতিশোধ।
বাংলাদেশে চাপালো রোহিঙ্গা উদবাস্তু এবং জঙ্গিবাদের ক্রোধ।
দিল্লিতে এলো মৌলবাদি হিন্দু জাতিয়তাবাদ।
ঢাকা, কোলকাতার সাথে সম্পর্ক বদলালো,
প্রথমে বলিউড তারপর সাব টাইটেলে অনুবাদ!
উর্দি খুলে করোন্না ভাইরাস এখন অবতির্ন সরাসরি!
কিভাবে এখন আমরা স্বাভাবিক জিবন যাপন করি?
আগেও বা পারছিলাম কৈ!
ঝাকের মাছ ঝাকায়, ডুলায় নিশি পাওয়া হৈ চৈ!
কখ্যন পড়বো  আরেব্বাবা সাহিত্য!
মাখ্যন নন্নি পাপ্পিয়াজির খাব্বো, খাচ্ছিতো।

পাপিয়ার কি পাপিয়া হবার স্বাধিনতা আছে?
আকাশে উড়তে, গাছে চড়তে ওকে কেউ করছে না বারন।
কিন্তু ব্র্যাকেটে রেখে দিচ্ছে কনসার্নের মাপামাপি কার্জকরন,
দুর্ঘটনা ঘটলে বলে দিচ্ছে, বলেছিলাম না, শোনো নাই।
আর বেতন দেবার বেলায় হালখাতা বরাবর বেসামাল।
মাঠে নেমেছে হিজাব ফ্রেশের মারকেটিয়ার,
জনসন এন্ড জনসন, ইউনিলিভার্সের যত পকেটমার।
করোন্নার কালো দুস্বপ্নে ফেয়ার এন্ড লাভলি মোচড়ায়ে
বেচবে যত বাতিল স্যানিটাইজার।
চৈনিক ভাইরাসের জ্বলন্ত চুলা থেকে
তুলবে ছেকে কর্পোরেট ক্যানসারের ফুটন্ত কড়াইতে।
কিছু কিছু ফেসমাস্ক, সাবান মাগনা দেবে সেলফির ওয়াস্তে।
করোন্না য্যানো দাম বাড়াবার রোজদারি মৌসুম।
NGOরা সাজবে হাতেম তাই বাংলাকে পাড়ায়ে করোন্নার ঘুম।
জেলের ভাত পাতে ডলে খায় বয়াতি শরিয়ত,
পদক হাতে সাইমন ধরে বেসুরো সাধুসংগ গৎ।
সপ্ত আসমানে হাই তোলে লালনের ভাবগুরু সিরাজ সাই।
বাচ্চালোক শুনতে থাকোঁ ভাবান্দোলনের মনভোলানো লুলাবাই।
কখ্যন পড়বো  আরেব্বাবা সাহিত্য!
মাখ্যন নন্নি পাপ্পিয়াজির খাব্বো, খাচ্ছিতো।

সাইবাবাদের কপালে চন্দ্রবিন্দু  যত ইচ্ছা তত বসাও।
চন্দ্র কিন্তু থেকে যায় ক্ষেপি-পাপিয়াদের নাগালের বাইরে।
ঘরের চাবি বেচেছে সে লোকনাচনের পিছুহটা, কারচুপি  বন্দরে।
গৌরচন্দ্র খেতে খেতে চন্দ্রযান ছাড়া
তোমার তেমন কোনো উপায়ও আর নাই।
পিছু ধাওয়া পালটা ধাওয়া চলে গ্রাম্য কথকথায়,
নাগরিক নাটকের বেশভুষার অন্তরালে
ড্রাকুলার দাতকপাটি রক্তচক্ষু ম্যালে ঢাকার ওয়েস্ট ইন হোটেলে।
হোটেলঘরেরর দেয়ালে দেয়ালে ফ্রেমে বাধা নক্সিকাথায়
দেখা পাও শাপ্য, হোমার, চন্দ্রাবতি, ভার্জিল,
টের পাও নাই, কান নিয়ে উড়ে গেছে চুপকথার হবুগবু চিল।
নিশব্দ যে নিশব্দ তাও তুমি বুঝছো না।
হতবাক তাকিয়ে দেখছো  শব্দকে জব্দ করা র‍্যাবের পুলিশ।
ভাষা-গবেষক সাজায়ে দিচ্ছে নৈশব্দের বানান-শালিশ।
তুমি দৌড়াচ্ছো, দৌড়ের ওপর থাকাটা তোমার দায়।
পা না থাকলে হামাগুড়ি দিয়ে স্বপ্নেও দৌড়াতে হবে!
পোষাক, পরিচয়, আত্মার সঙ্কটে যখন চয়ন আলতো স্বরে সুধায়,
একটু পড়ো, দম নাও, পানি আর বাতাসা খাও, একটু জিরাও।
তুমি আর তোমাকে বলবারও ফুরসৎ পেলে না,
কখ্যন পড়বো  আরেব্বাবা সাহিত্য!
মাখ্যন নন্নি পাপ্পিয়াজির খাব্বো, খাচ্ছিতো।


চয়ন খায়রুল হাবিব
১৪/০৩/২০
ব্রিটানি, ফ্রান্স

ছবি, হৌস খাস, দিল্লি, ২০১৭।চয়ন খায়রুল হাবিব।